বুধবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৫, ১০:১৮ অপরাহ্ন

স্যোশাল মিডিয়ায় ১৩ শতাংশ শিশু-কিশোর হয়রানির শিকার

বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তি ডেস্ক:: জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা (ইউনিসেফ) বলছে, দেশের ১৩ শতাংশ শিশু-কিশোর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে (সোশ্যাল মিডিয়া) হয়রানি বা উত্ত্যক্তের শিকার হয়েছে। আর একাধিকবার হয়রানির শিকার হয়েছে ৩ দশমিক ৬ শতাংশ শিক্ষার্থী। হয়রানি বা উত্ত্যক্তের কারণে ৩ দশমিক ৩ শতাংশ শিক্ষার্থী তাদের সোশ্যাল মিডিয়ার অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিয়েছে।

শিশুদের জন্য ইন্টারনেট নিরাপদ করতে বছরব্যাপী গণসচেতনতা কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ জরিপ প্রকাশিত হয়। ৩০ মার্চ শুক্রবার সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটারে এ অনুষ্ঠান যৌথভাবে আয়োজন করে ইউনিসেফ ও ফেসবুক।

সারা দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর একটি বড় অংশের বয়স ১৮ বছরের নিচে। তিন সপ্তাহ আগে ইন্টারনেটে নিরাপত্তা নিয়ে শিশুরা কী ভাবে, তাদের পরিস্থিতি কী—এসব জানতে ইউনিসেফ সারা দেশে এই জরিপ চালায়। অনলাইনভিত্তিক এই জরিপটি নয় লাখের বেশি শিশু-কিশোরের কাছে পৌঁছায়। ১৩ থেকে ১৮ বছর বয়সী ১১ হাজার ৮২১ ছেলেমেয়ে এই জরিপে অংশ নেয়।

ইউনিসেফ বাংলাদেশের ওই জরিপে বলা হয়, জরিপে ৮১ দশমিক ২ শতাংশ শিশু-কিশোর সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রতিদিন সময় কাটায়। এদের ৯০ শতাংশই মুঠোফোনে ইন্টারনেট ব্যবহার করে। ৮০ দশমিক ১ শতাংশ শিশু-কিশোর কোনো ধরনের হয়রানির বা উত্ত্যক্তের শিকার হয়নি। জরিপের অংশ নেওয়া শিশু-কিশোরদের ৫২ দশমিক ৩ শতাংশ জানায়, কোনো অপরিচিত লোক তাদের অনলাইনে বন্ধু হতে চাইলে তারা বন্ধু হবে। তবে ৩৩ দশমিক ৯ শতাংশ শিশু-কিশোর বন্ধু হবে না বলে জানায়।

ইউনিসেফ বাংলাদেশের কমিউনিকেশন ম্যানেজার এ এম শাকিল ফায়েজুল্লাহ জরিপের ফলাফল তুলে ধরেন। তুমি কী কারণে ইন্টারনেট ব্যবহার করো—এমন প্রশ্ন জরিপ করা হয়। এর উত্তরে ৬৭ দশমিক ৪ শতাংশ শিশু-কিশোর জানায়, তারা শেখার জন্য ইন্টারনেট ব্যবহার করে। আর ২১ দশমিক ৪ শতাংশ বন্ধু বানানোর জন্য ইন্টারনেট ব্যবহার করে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটারে নিরাপদ ইন্টারনেট নিয়ে চলছে দিনব্যাপী নানা আয়োজন। দেশের প্রায় ১০০ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এতে অংশ নিচ্ছে। সকালে সুরের ধারা স্কুলের শিক্ষার্থীদের ‘আমরা সবাই রাজা’ ও ‘এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে না কো তুমি’ গান পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ বলেন, ‘শিশুরা ট্যাব ব্যবহার করবে, ইন্টারনেট ব্যবহার করবে—এটাই আমরা চাই। তবে ওরা নিরাপদভাবে ব্যবহার করবে। প্রতিমন্ত্রী বলেন, জ্ঞানের ভান্ডার হিসেবে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে হবে। ঝুঁকির মধ্যে যাতে কেউ না পড়ে। এ জন্য মা-বাবাকে সচেতন হতে হবে।’

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক শামসুজ্জোহা বলেন, ইন্টারনেটে শিশুদের নিরাপদ পরিবেশ পাওয়ার অধিকার আছে। শিশু-কিশোরদের নিরাপদ ইন্টারনেট দিতে গাইডলাইন স্মার্টভাবে দিতে হবে।

নিরাপদ ইন্টারনেট শীর্ষক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ।নিরাপদ ইন্টারনেট শীর্ষক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ। ফেসবুকের ভারত ও দক্ষিণ এশিয়ার পলিসি প্রোগ্রাম ম্যানেজার শ্রুতি মগি বলেন, অনলাইনে শিশুর নিরাপত্তার বিষয়টি বেশ সংকটপূর্ণ। শিশুদের কথা বলতে হবে অভিভাবকদের সঙ্গে। ওদের জন্য একটা নিরাপদ কমিউনিটি গড়ে তুলতে হবে।

ইউনিসেফের এ দেশীয় প্রতিনিধি এডুওয়ার্ড বেগবেদার বলেন, ডিজিটাল প্রযুক্তি ইতিমধ্যেই পৃথিবীটা পরিবর্তন করে ফেলেছে। কম বয়সীরা (টিনএজ) বেশি ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। ডিজিটাল প্রযুক্তি শিশুরা ব্যবহার করছে তথ্য খুঁজতে। তবে শিশুদের হয়রানির শিকার হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। দুষ্কৃতকারীরা খুব সহজেই শিশুদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে পরিচয় লুকিয়ে। এটা কমাতে অনেক গবেষণা ও সচেতনতা প্রয়োজন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com